কি খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে?

আর্টিকেলটিতে হিমোগ্লোবিন কি, হিমোগ্লোবিনের কাজ এবং রক্তে হিমোগ্লোবনের পরিমাণ বাড়ে এমন খাবার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়লে বিষয়গুলোতে আপনার স্পষ্ট ধারণা হবে।

হিমোগ্লোবিন কি?

হিমোগ্লোবিন হল লোহিত রক্তকণিকার একটি প্রোটিন যা অক্সিজেন বহন করে। হিমোগ্লোবিন পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ পরিমাপ করা হয়। অক্সিজেন ছাড়া, শরীরের পেশীগুলি স্বাভাবিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি পায় না। প্রায় সব মেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে হিমোগ্লোবিন থাকে।

hemoglobin-হিমোগ্লোবিন

হিমোগ্লোবিনের কাজ কি?

১. অক্সিজেন বহন: হিমোগ্লোবিনের লৌহ অক্সিজেনের সাথে বন্ধন তৈরি করে, যা 'অক্সিহিমোগ্লোবিন' নামে পরিচিত। এই অক্সিহিমোগ্লোবিন রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করে।

২. শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন সংগ্রহ: ফুসফুসে, হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং অক্সিহিমোগ্লোবিনে পরিণত হয়।

৩. ক্লান্তি দূরকারী: যথেষ্ট অক্সিজেন পেলে আমরা energetic থাকি। হিমোগ্লোবিন শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করে ক্লান্তি দূর করে।

৪. কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে: কার্বোক্সিহিমোগ্লোবিন রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে ফুসফুসে পৌঁছায়, যেখানে কার্বন ডাই অক্সাইড বেরিয়ে যায় এবং অক্সিজেন হিমোগ্লোবিনের সাথে যুক্ত হয়।

৫. শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: হিমোগ্লোবিন রক্তকে লাল রঙ প্রদান করে, যা রোদের তাপ শোষণে সাহায্য করে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: হিমোগ্লোবিন কিছু রোগ প্রতিরোধকারী কোষের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।

৭. অ্যাসিড-ক্ষার ভারসাম্য রক্ষা: হিমোগ্লোবিন রক্তের pH স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৮. জীবনদানকারী: পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন ছাড়া, আমাদের শরীরের কোষগুলো মারা যেতে পারে।

রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা কত?

সুস্থ দেহে প্রতি ১০০ মিলিলিটার রক্তে ১৫ গ্রাম হিমোগ্লোবিন থাকে। পুরুষ, মহিলা ও শিশুভেদে এর পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়।

কি খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে?

আপনার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য আপনি অনেক কিছু করতে পারেন, যার মধ্যে রয়েছে লৌহ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। এখানে কিছু সহজ খাবার রয়েছে যা আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে:

১. মাংস: গরুর মাংস, খাসির মাংস, মুরগির মাংস এবং মাছ সবই লোহের ভাল উৎস।

২. ডিম: ডিম হল লোহের আরেকটি ভাল উৎস এবং এতে প্রোটিন এবং ভিটামিন বি 12ও থাকে, যা হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে।

৩. সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, মেথি শাক এবং কাঁচা শাক সবই লোহের ভাল উৎস।

৪. ডাল: মুসুর ডাল, মসুর ডাল এবং ছোলা ডাল সবই লোহের ভাল উৎস।

৫. শুকনো ফল: খেজুর, কিসমিশ এবং বাদাম সবই লোহের ভাল উৎস।

৬. বীজ এবং বাদাম: সূর্যমুখী বীজ, তিল এবং কাঠবাদাম সবই লোহের ভাল উৎস।

৭. লৌহ-সমৃদ্ধ খাবার: বাজারে লোহ-সমৃদ্ধ অনেক খাবার পাওয়া যায়, যার মধ্যে সিরিয়াল, ওটমিল এবং রুটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

৮. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: ভিটামিন সি শরীরকে লৌহ শোষণে সাহায্য করে। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে কমলালেবু, আমলকি, পেঁপে এবং স্ট্রবেরি।

হিমোগ্লোবিন কমে গেল কি করবেন?

হিমোগ্লোবিন কমে গেলে, চিন্তা করবেন না, উপায় আছে!

প্রথমে, ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। তারা আপনার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কতটা কমেছে তা পরীক্ষা করবেন এবং কারণ নির্ণয় করবেন। কারণ অনুসারে, ডাক্তার চিকিৎসা দেবেন।

এছাড়াও, আপনি হিমোগ্লোবিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন।

Next Post Previous Post